হেরি-মেগান: ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি?
এ সপ্তাহের সম্পাদকীয় ।। ইসু্য ২১৯৩
প্রিন্সেস ডায়ানার ইতিহাস পুনরাবৃত্তি হলো বাকিংহাম প্যালেসে। এবার আরো ভয়াবহ দৃশ্যপট। যোগ হলো বর্ণবাদের মারাত্মক অভিযোগ। এমনকি মানবিকতার ইতিহাসে ব্রিটেনের সকল অর্জন ও দৃষ্টান্ত এবার রাজপরিবারকে প্রশ্নের মুখোমুখি করেছে। মেগান-হেরি দম্পতির নিরাপত্তা তুলে নেওয়া, মেগানের চলাফেরার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ আর তাঁদের জীবনকে বিষিয়ে তোলা— নজিরবিহীন। এখন এসব বিষয় পাবলিক ডোমেইনে ঘুরছে। বাকিংহাম প্যালেস বিষয়গুলোকে ‘সিরিয়াসলি’ নিয়েছে বলে জানিয়েছে। কিন্তু এইসব অভিযোগ একদিনের নয়. এবং কয়েকদিনের মধ্যে এর রেশ কেটে যাবে, ইটা ধারণা করাও সঠিক হবে না । ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির এই ঘটনা প্রবাহ কোনো অবস্থায়ই যাতে বিয়োগান্তক অধ্যায়কে ডেকে না আনে, সেটাই ডায়ানার উত্তরাধিকারদের জন্য একমাত্র কামনা। বৈষম্য-অন্যায়ের প্রতিবাদ আর পরিণতিতে সকল রাজকীয় মর্যাদা ত্যাগের মহিমা ডায়ানাকে ব্রিটিশ জনমনে রানীর আসনে বসিয়েছিলো। হ্যারির ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। এই দম্পতি ডায়ানার ত্যাগকে আবারো মনে করিয়ে দিয়ে জনমনে অসীম শ্রদ্ধায় স্থান করে নিয়েছে। বাকিংহাম প্যালেস ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটালেও শেষ অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তি কারোই কাম্য নয় । বরং বৈষম্য আর অবিচারের বিরুদ্ধে আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে হেরি-মেগান দম্পতির সুদীর্ঘ পথচলা ও সাফল্য আগামী দশকগুলোতে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাবে, এটাই প্রত্যাশা। হেরি-মেগান দম্পতি — গুডলাক।
বিচারপতি তোমার বিচার …
বাংলাদেশ সংবিধানে বিচার বিভাগকে রাষ্ট্রের আওতার বাহিরে রাখা হয়েছে। তাহলে রাষ্ট্রের ‘ভাবমূর্তি’ রক্ষার জন্য বিচার বিভাগ এতো মরিয়া কেনো? যার এখতিয়ার বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫২ ধারা তাদের দেয়নি। এই তথ্য সম্প্রতি একজন আইন বিশেষজ্ঞ উল্লেখ করার পর থেকে অনেকের চিন্তার জগতে এই প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। রাষ্ট্রের অঙ্গ হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা রেকর্ড বিশ্বের সুশাসন, বিচারবিভাগ ও মানবাধিকারের সকল তালিকায় বাংলাদেশকে একেবারে তলানিতে নিয়ে গেছে। এতসব মারাত্মক অপকর্মের কারণেই বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। কে কি লিখবে, বলবে -তা তার জন্মগত ও সাংবিধানিক অধিকার। আর গণতান্ত্রিক দেশে কোনো মন্ত্রী -প্রধানমন্ত্রী অথবা আমলাকে তাঁর কর্ম/অপকর্মের জন্য নাগরিকদের মন্তব্যকে আইনের আওতায় আনা— কোনো সভ্য সমাজ মেনে নিতে পারে না। এদের অপকর্মকে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা কোনো অসতর্কতা নয়, বরং বুদ্বিবৃত্ত্বিক ও বিচারিক শক্তির অপপ্রয়োগ। একারণেই যেসব দেশে জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষায় যখন বিচারবিভাগ ব্যর্থ হয় অথবা যেখানে বিচারবিভাগ ফ্যাসিবাদের নাট বল্টু হিসেবে কাজ করে, সেখানেই অধিকারহারা মানুষ জেগে উঠে সমস্বরে আওয়াজ তুলে-— বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা আজ জেগেছে সেই জনতা।