স্যার টমের প্রতি শ্রদ্ধা
এ সংখ্যার সম্পাদকীয় ।। ২১৮৮
অবশেষে করোনাই নির্মমভাবে কেড়ে নিল ১০০ বছর বয়সী স্যার টম মুরকে। এনএইচএস- এর জন্য ১০০০ পাউন্ড চ্যারিটি তহবিল যোগাতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৫ লাখ মানুষ ৩৩ মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে সেই উদ্যোগকে সমর্থন জানায়। স্যার টম মুর মহামারীর ইতিহাস গড়লেন। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করলেন, স্থাপন করলেন এক দৃষ্টান্ত। বয়স , সময় অথবা অর্থ কোন বিষয় নয় । যেকোনো ভালো কাজের জন্য শুধু প্রয়োজন উদ্যোগ আর অন্যদের সম্পৃক্ত করার প্রয়াস।স্যার টম মুর, আপনার প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।
অভিনন্দন আল জাজিরা
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা’কে অনেক অভিনন্দন। চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশ নিয়ে আল জাজিরা প্রকাশ করে অনুসন্ধানী ও তথ্যবহুল প্রামাণ্য চিত্র “অল দ্যা প্রাইম মিনিস্টার’স ম্যান” (ওরা প্রধানমন্ত্রীর লোক)। এই প্রামাণ্যচিত্র শুধু বাংলাদেশ নয়, সর্বত্র হৈচৈ ফেলে দিয়েছে। এতে দেখানো হয়েছে সেনাপ্রধান ও তার কুখ্যাত তিন ভাই কিভাবে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় রাষ্ট্র ক্ষমতা অপব্যবহার করছেন। সন্ত্রাস, খুন, মানি লন্ডারিং এবং এই সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের দ্বারা ৱ্যাব- পুলিশের যথেচ্ছ ব্যবহার প্রামাণ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে। হলিউড-বলিউডের চরম ফিকশন মুভিকে হার মানিয়েছে। আঁতকে উঠার মতো প্রতিটি ফ্রেম। সরকার প্রধানের ছত্রচ্ছায়ায় মাফিয়া স্টাইলের কর্মকান্ড দক্ষিণ আমেরিকার মাফিয়া নিয়ন্ত্রিত কলম্বিয়াকেও হার মানিয়েছে। বাক স্বাধীনতায় ১৫০তম অবস্থানের দেশ বাংলাদেশ (রেফ: প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স ২০২০)। তাই এই রাষ্ট্রটি কিভাবে ধীরে ধীরে মাফিয়াদের হাতে চলে যাচ্ছে, সেই প্রামাণ্য ও অনুসন্ধানী খবরের জন্য আন্তর্জাতিক মিডিয়াই এখন একমাত্র ভরসা। আল জাজিরা সেই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেছে বলে বিশেষ ধন্যবাদ প্রাপ্য। যদিও ১নভেম্বর ১৯৯৬ থেকে এই কাজটিই করে যাচ্ছে এই চ্যানেল। যার মূল্য তাদের দিতে হয়েছে, হচ্ছে। আল জাজিরা’কে অনেক ধন্যবাদ মাফিয়া নেটওয়ার্ক উম্মোচন ও প্রকাশের জন্য।
জেরুজালেম ইস্যুতে বাইডেন কি করবেন?
বর্ণবাদ ও সন্ত্রাসে উস্কানির দায়ে অভিযুক্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প তিনটি কারণে বিশ্ব থেকে আমেরিকাকে প্রায় এক ঘর করে ফেলে। প্যারিস ক্লাইমেট এগ্রিমেন্ট, ইরান নিউক্লিয়ার ডিল আর জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতির একতরফা সিদ্ধান্ত। প্যারিস আর ইরান ইস্যুতে বাইডেন ইতিবাচক অগ্রগতির সূচনা করেছেন।বাকি রইল জেরুসালেম ইস্যু। জেরুজালেমকে একতরফাভাবে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান ও সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস স্থাপন মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী অশান্তির দাবানল ছড়িয়ে দেয় । কিন্তু এই ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব সভা থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এমনকি ফাইভ আইস বলে খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের অপর চার দীর্ঘস্থায়ী মিত্র কানাডা, যুক্তরাজ্য অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড কেউই যুক্তরাষ্ট্রকে সমর্থন দেয়নি ।এমনকি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পোল্যান্ড ছাড়া কোন দেশে জেরুজালেম ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন করেনি। যৌবনে চরম ইসরাইলপন্থী হিসেবে পরিচিত জো বাইডেন পরিণত বয়সে এএই ইস্যুতে কি করবেন তা এখন দেখার বিষয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশ্বের যে কোন অঞ্চলে যে কোন সময়ে যুদ্ধ বাধানোর কিংবা যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে অঞ্চলে শান্তি স্থাপনের অসাধারণ ক্ষমতা এখন সর্বজনবিদিত। মার্কিন সিনেট ও রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি অভিজ্ঞ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্ব সভার নেতৃত্বে ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকার নিয়ে আসা জো বাইডেন জেরুজালেম ইস্যুতে তাঁর কোন ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন সেটির ওপরই নির্ভর করছে অন্তত আগামী চার বছরের জেরুজালেম তথা মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি।