২০ জানুয়ারী ‘২১: বিশ্ব নাজাত দিবস, বিষাক্ত ট্রাম্প শাসনের অবসান
এ সপ্তাহের সম্পাদকীয় ।। ইস্যু ২১৮৬
শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, সারা বিশ্বের জন্যই একটি স্বস্তিদায়ক ও মুক্তির দিন (নাজাত দিবস) হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের চার বছরের শাসন আধুনিক রাষ্ট্র বিজ্ঞানের ইতিহাসে একটা বিষাক্ত (toxic regime) অধ্যায় হিসেবে স্থান পাবে, এটা মোটামুটি নিশ্চিত। সাদা বর্ণবাদের কবল থেকে মুক্তি পেলো আমেরিকা আর বিশ্ব পেলো গণতন্ত্রের কেন্দ্রভূমির নতুন দিনের সূচনা। মহামারীতে বিপর্যস্ত বিশ্বের জন্য এই বছরের শুরুতেই এই এক আনন্দ দিন।
গণতন্ত্র অন্য সব মতবাদের বিপরীতে সাম্য আর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার বার্তা নিয়ে বিশ্বে সমাদৃত। সেখানে যুগে যুগে দেশে দেশে গণতন্ত্রের সুযোগে বহু ট্রাম্প কায়েম করে দুঃশাসন, স্বৈরশাসন আর কোথাও ফ্যাসিবাদ। এমনিভাবে বিপুল সংখ্যক মানুষকে সত্য-মিথ্যা মিশেলের প্রপাগান্ডার মাধ্যমে জনতুষ্টিবাদী ধারাকে প্রভাবিত করে হিটলারও ক্ষমতায় এসেছিল ১৯৩৩ সালে। তারপর ১৪ বছরে ওই জার্মান নেতা জার্মান ও বিশ্বের জন্য কি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরী করেছিলেন, সেটা স্মরণ করাও রীতিমতো রোমহর্ষক।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধান ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ১০০ ভাগ কার্যকর থাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব আরেক ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে বেঁচে গেলো। কিন্তু বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই জনগণের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার এই প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যকর হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র সাদা বর্ণবাদের কবল থেকে মাত্র চার বছরে মুক্তি পেলেও অন্য দেশগুলো যারা অন্য আরো নানা পরিচয়ের অপশাসনের কবলে ধুঁকে ধুঁকে মরছে, তাদের
মুক্তির উপায় কি?
মিথ্যা, চরম মিথ্যা, গোষ্ঠীবাদ আর পেশীতন্ত্র’র কবলে গণতন্ত্রের নিষ্পেষণ অবসানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসন কি আলো দেখাতে পারবে? জনগণের শক্তিকে জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে বিভক্তি, বর্ণবাদী (নানান মতবাদের আড়ালে) তত্ত্ব বা সুপ্রিমেসি কায়েমের রক্তাক্ত ইতিহাস আধুনিক সভ্যতায় এক কালো অধ্যায় রচনা করেছে। ট্রাম্পের অবসানে বিশ্বে স্বস্তির নিঃশ্বাস আর মানবিকতায় বিশ্বাসীদের মুখের হাসি ভিজ্যুয়াল মিডিয়ার কল্যাণে সর্বত্র দৃশ্যমান।
বিদায়ী ভাষণে ট্রাম্প শেষ হুমকি দিয়ে গেছেন- “উই উইল বি ব্যাক ইন সাম ফর্ম “(আমরা আবারো ফিরে আসবো কোনো না কোনোভাবে)। ট্রাম্প মুক্ত পৃথিবীতে নব্য নাজিবাদের সম্ভাব্য উত্থান মোকাবেলায় জো বাইডেনের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফল হোক, এই আশাবাদ থাকবে এই বিশেষ দিনে। বিদায় ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্বাগত জো বাইডেন।