এমসি কলেজে ধর্ষণের ঘটনায় বাংলাদেশী শিক্ষক এসোসিয়েশন ইউকের ভার্চুয়াল প্রতিবাদ সভায় দুষ্কৃতিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী
লণ্ডন, ৫ অক্টোবর – সিলেটের এমসি কলেজে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের মত বর্বরোচিত, ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশী টিচার্স এসোসিয়েশন ইউকে(বি টি এ)। গত ৪ অক্টোবর, রবিবার এক অনলাইন জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল প্রতিবাদ সভায় ঘটনার সাথে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করা হয়।
বাংলাদেশী টিচার্স এসোসিয়েশন (বিটিএ)-এর সভাপতি আবু হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল বাসিত চৌধুরী ও যুগ্ন-সম্পাদক ডক্টর রোয়াব উদ্দিনের সঞ্চালনায় সভায় বাংলাদেশ, আমেরিকা এবং ইউকে থেকে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ন্যাক্কারজনক এই ঘটনা সিলেটবাসী তথা সমগ্র বিশ্বে বসবাসরত সকল বাংলাদেশী মানুষকে মারাত্মকভাবে ব্যথিত ও লজ্জিত করেছে। অনলাইন এই প্রতিবাদ সভায় বক্তারা, এই জঘন্য লোম হর্ষক ঘটনায় নিপীড়িত ও নির্যাতিত গৃহবধূর প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন এবং দোষীদের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে ধর্ষণ নির্মূলে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ।
সভায় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। উপস্থিত বক্তারা সবাই জোর দিয়ে বলেন যে, ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরা্ধকে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান প্রয়োগ করতে হবে। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা এবং ছাত্রাবাসে একটি নিরাপদ এলাকা হিসাবে গড়ে তুলতে প্রশাসনকে নিষ্ঠা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
উক্ত সভায় আলোচক বৃন্দ, ধর্ষকদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করার দাবী সহ, এই ঘটনায় এম সি কলেজের অধক্ষ্যের শাস্তি দাবী করাকে অযৌক্তিক বলে দাবী করা হয়। বক্তারা বলেন যে, ক্ষমতায় থাকা দলের কতিপয় গুন্ডাদের অভয়ারণ্য হিসাবে এম সি কলেজের পরিবেশকে দূষিত করার দায় স্থানীয় এসপি, ওসি সহ স্থানীয় প্রশাসন এবং রাজনৈতিক অপশক্তির। যাদের ছত্রছায়ায় দলীয় ছাত্র নেতারা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনবার জোড় দাবী জানানো হয়।
অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার সাথে সাথে প্রশাসনসহ সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ সহ জনসাধারনের দায়বদ্ধতা বৃদ্ধিসহ, এলাকার নিরাপত্তা জোড়দার, স্থানীয় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের সেবার মান উন্নয়ন সহ শুধু সিলেট নয় সারা বাংলাদেশে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ বন্ধ সহ নারী ও শিশুর জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ গঠনে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
বক্তারা বলেন, সামাজিক এবং রাস্ট্রীয় দায়বদ্ধতা, যে বিষয়ে সকলকে সচেতন হতে হবে। ধর্ষণ পরবর্তী ভিক্টিমের ন্যায় বিচার প্রাপ্তি সহ পুর্নবাসনের সুষ্ট ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।
অচিরেই সরকারের নিকটে উদ্বেগ ও বিচারের দাবী দাওয়া সহ স্বারকলিপি প্রদান ও সিলেটে আন্ত:শিক্ষালয়, মাদ্রাসা, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন মিলে কমিটি গঠনের মাধ্যমে ধর্ষণের বিরুদ্ধে গনসচেতনতা সৃষ্টি, নৈতিক শিক্ষার বৃদ্ধি সহ ফান্ড কালেকশনের মাধ্যমে অন্যান্য কর্মসূচি বাস্তবায়নের অংগীকার ব্যক্ত করেন।
সভায় বক্তব্য রাখেন, ঢাকা ইউনিভার্সিটি’ অ্যালামনাই কার্যকরী সভাপতি দেওয়ান গৌস সুলতান, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুর রাকিব, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুক্তাবিসুন নূর, সাবেক ছাত্রনেতা নজমুল হক, প্রফেসর মোহাম্মদ মালেক, সাবেক বিসিএ প্রেসিডেন্ট আব্দুল মুনিম, সাবেক মেয়র সেলিম উল্লাহ, এডভোকেট শাহ ফারুক আহমেদ, কাউন্সিলর পারভেজ আহমেদ, সাবেক কাউন্সিলর হেলাল রহমান, আমেরিকা থেকে সাবেক ছাত্রনেতা কাজী ওয়াদুদ আহমেদ ও মোস্তাক হোসেন বকুল, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মিসেস রিপা রাকিব, লিপি হালদার, সেলিনা আহমেদ, খলিল আহমেদ কবির, সাংবাদিক শামসুর রহমান, সাঈদা চৌধুরী , কাজি আহমেদ, আনোয়ার খান, সিতূ মিয়া, জেসমিন আরা, নাজমা বেগম, আলিমুজ্জামান ও ফরিদ আহমেদ।
অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন —বাংলাদেশী টিচার্স এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মাজেদ বিশ্বাস, মিসবাহ আহমেদ, জামাল আহমেদ, ভিপি ইকবাল হোসেন, সৈয়দ রকিব আহমেদ, সাইফুল চৌধুরি, মঞ্জারিন রাশিদ, শাহিন খান, গোলাম কাদের চৌধুরী, মাহমুদা সুজি, মঞ্জুর রেজা চৌধুরী, মাহবুব হোসেন, হাবিবুর রহমান, মো. শাহজাহান, শওকত মাহমুদ টিপু ও শেফা বেগম।