কাউন্সিলের বিরুদ্ধে, আইনী লড়াই …

খরচ বাবদ প্রয়োজন ২০ হাজার পাউণ্ড, কমিউনিটির সহযোগিতা কামনা
লণ্ডন, ১০ ফেব্রুয়ারী – এবার আইনী লড়াইয়ের মুখে পড়েছে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের জন বিগসের প্রশাসন। সেইভ আওয়ার কমিউনিটিজ গ্রুপস এণ্ড সেইভ আওয়ার সার্ভিসেস-এর ব্যানারে বঞ্চিত কমিউনিটি সংগঠনগুলো মেয়রের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আইনী পদক্ষেপ নিয়েছে। অনুদান বণ্টনে কাউন্সিলের এলসিএফ গঠন সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল রিভিউ চেয়ে গত ২২ জানুয়ারী অনুদানবঞ্চিতদের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে আবেদন করলে, মহামান্য আদালত তা শুনানির জন্য গ্রহণ করেন।
গত ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান ড. মোঃ আব্দুল হান্নান। সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ জানান, তারা মেয়রকে চিঠি দিয়েছিলেন, কোন উত্তর পাননি।
কাউন্সিলকে ‘লেটার অফ ক্লেইম’ পাঠানো হলেও তা অগ্রাহ্য করা হয়েছে গুরুত্ব পায়নি। তাই শেষ ভরসা হিসেবে তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
উল্লেখ্য, জুডিশিয়াল রিভিউর অনুমোদনে?মাননীয় বিচারক তাঁর মতামত ব্যক্ত করে বলেছেন, এই দাবির কারণগুলো যুক্তিযুক্ত, যদিও কোন কোন কারণ অন্য কারণের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও উল্লেখ করেন, আমি বিশেষভাবে পরোক্ষ বৈষম্যের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন।
জানা গেছে, জুডিশিয়াল রিভিউ সম্পন্ন করতে খরচ বাবদ কমপক্ষে ২০ হাজার পাউণ্ড দরকার। এ পর্যন্ত বড় অংকের অর্থ আমরা আবেদনকারীরা নিজেদের পকেট থেকে বহন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা জুডিশিয়াল রিভিউয়ের অনুমোদন প্রাপ্তির পরে ন্যায়বিচার আর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। এজন্য পরবর্তী আইনী প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে দরকার কমিউনিটির সহযোগিতা। আর এজন্য মামলার ব্যয় বহনে গঠিত ক্রাউড ফাণ্ডিং-এ সহযোগিতা কামনা করে নেতৃবৃন্দ জুডিশিয়াল রিভিউর ব্যয়ভার বহনে কমিউনিটির সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা আপনাদের সঙ্গে বিগত ২০১৯ সালের ২৩শে আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে মিলিত হয়েছিলাম। সে সময়ে আমরা টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়রের নিকট আবেদন করেছিলাম তিনি যেনো এলসিএফ- এর ব্যাপারে তার সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনা করেন যাতে কমিউনিটির ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের সংগঠনগুলো অনুদান পেতে পারে। আমরা সুষম গ্রান্ট বন্টনের জন্য আবেদন করেছিলাম। আমরা আরও উল্লেখ করেছিলাম, শেষ পন্থা হিসেবে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনে আইনের দ্বারস্থ হবো। আমরা মেয়রের সাথে পত্রবিনিময় করেছি। কিন্তু তার কোন জবাব পাইনি। মেয়র সাহেব তার সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনা করতে কিছুতেই রাজি হননি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, এই প্রেক্ষাপটে আমরা টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলকে লেটার অব ক্লেইম প্রদান করি। কাউন্সিল তাতেও কোন গুরুত্ব দেয়নি। তারা এই আবেদনটি আমলেই নেননি। অবশেষে আমরা একান্ত বাধ্য হয়ে গত ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ট্রাইবুন্যাল সার্ভিসে জুডিশিয়াল রিভিউয়ের জন্য আবেদন করি। এরই ফলশ্রুতিতে ২০২০ সালের ২২শে জানুয়ারী ডেপুটি হাইকোর্ট জজ রজার টার হার কিউ সি আমাদেরকে জুডিশিয়্যাল রিভিউ এর অনুমতি দেন।
এদিকে, স্থানীয় কমিউনিটি সংগঠনগুলোকে তহবিল বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের বিরুদ্ধে যে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ সম্পর্কে মেয়র জন বিগসের পক্ষে তাঁর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন যে মেয়র ইতোমধ্যে বিভিন্ন মিডিয়ায় বলেছেন, সব ধরণের যাছাইবাছাই ও যথাযথ প্রোসেস মেইন্টেইন করে গ্র্যান্ট দেওয়া হয়েছে। মেয়র আরো বলেছেন, সাবেক মেয়রের (লুৎফুর রহমান) সময় এই অব্যবস্থা হয়েছে। তখন কাউন্সিলের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে সরকারের নিয়োগ করা কমিশনারদের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছিল। এই মুখপাত্র আরো জানান, মেয়র বলেছেন আইনী চ্যালেঞ্জ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে মোকাবেলা করা হবে।