লণ্ডনে বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সমাবেশে তারেক রহমান: বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের জাতির পিতা শহীদ জিয়াউর রহমান
লণ্ডন, ৪ সেপ্টম্বর – স্বাধীনতার ঘোষক বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের জাতির পিতা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
লণ্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সমাবেশে তিনি এই ঘোষণা দেন। ২ সেপ্টেম্বর পূর্ব লন্ডনের রয়েল রিজেন্সি হলে আয়োজিত প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সমাবেশে বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে হাজার হাজার নেতা-কর্মীদের সামনে তারেক রহমান এই প্রস্তাব ঘোষণা করলে নেতা-কর্মীরা জাতির পিতা হিসেবে স্লোগান দিতে থাকেন।
তিনি নেতা-কর্মীদের কাছে শহীদ জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের পিতা হিসেবে ঘোষণা দিলে সবাই একসাথে স্লোগান দিতে থাকে।
তারেক রহমান বলেন, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানই হলেন সেই ব্যক্তি যে ব্যক্তি এমন একটি পতাকা নিয়ে আসলেন, এমন একটি পরিচয় নিয়ে আসলেন, যেই পরিচয়ের ছায়তলে সেই মানুষগুলোকে (বিভিন্ন ভাষা-বর্ণের গোষ্ঠী) একটা পরিচিতি দিলেন, সকলকেই তিনি একটা পরিচিতি দিলেন। আমরা হতে পারি বাঙালী, ওরা হতে পারে চাকমা, ওরা হতে পারে মারমা কিন্তু আমরা সকলে বাংলাদেশী।”
তিনি বলেন, “আমাদের নেতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শুধু বাঙালী জাত নয়, বাঙালীসহ সারাদেশে যতগুলো জাতি বসবাস করে, যারা বাংলাদেশি জাতির পরিচয় বহন করে, যারা নিজেদের বাংলাদেশি বলে পরিচয় দেয় সেই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জাতির পিতা, তিনি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের জাতির পিতা।”
তারেক রহমান বলেন, “বাংলাদেশে বহু জাতির মানুষের বসবাস। এখানে বাঙালীরা সংখ্যায় বেশি হলেও দেশ গঠনে সকলের অবদান রয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে বাঙালী, অবাঙালী সবাই যুদ্ধ করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার পর একটি দল তাদের অবদান ভুলে গিয়ে শুধু বাঙালী জাতি হিসেবে পরিচয় দিত। কিন্তু শহীদ জিয়াউর রহমানই সকল জাতির মানুষকে সম্মান দিয়ে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা করেন।”
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদ এর পরিচালনায় সভায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের সিনিয়র নেতারা বক্তব্য রাখেন।
স্বাধীনতা ঘোষণার কথা উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, “সারা জাতি একটা কিছু শুনতে চাচ্ছিলো। কিন্তু তৎকালীন রাজনৈতিক নেতৃত্ব যা জাতিকে শুনাতে ব্যর্থ হয়েছিলো ঠিক সেই কথাটি ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে শহীদ জিয়া জাতিকে শুনিয়েছিলেন। তিনি সেদিন স্বাধীনতাকামী জনগণের কাছে দিশারী এবং সাহসের প্রতীকে পরিণত হয়েছিলেন স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে।একিভাবে দেশ স্বাধীনের পরে যখন দেশে গণতন্ত্রণ অনুপস্থিত হয়ে পড়েছিলো। দেশের মানুষের বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব হলো। ‘৭৫ পরবর্তীতে শহীদ জিয়া আবারো গণতন্ত্র চর্চা শুরুর মধ্য দিয়ে, বাক স্বাধীনতার অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে দেশের জনগণের কাছে নিজেকে পরিণত করেছিলেন গণতন্ত্র এবং অগ্রযাত্রার প্রতীক হিসেবে।”
বিএনপির কাছে বাংলাদেশ নিরাপদ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বিএনপির কাছে বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিরাপদ। মানুষের স্বাধীনতা এবং সম্মানও নিরাপদ।”
দলের জন্য, দেশের জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, এমনকি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপির যেসব নেতাকর্মী নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদেরকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, “গত ১০ বছর ধরে বর্তমান স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমাদের যেসব লক্ষ-লক্ষ নেতা-কর্মী যারা বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছেন, অত্যাচারিত হয়েছেন, হারিয়েছেন অনেক কিছু-তাদেরও একইভাবে আজকের দিনে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।”
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে আটক রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, “দেশের এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত, প্রত্যেকটি মানুষ যারা জাতীয়তাবাদী আদর্শের দ্বারা অনুপ্রাণিত তারা সবচেয়ে বেশি করে একজন মানুষের অনুপস্থিতি অনুভব করছে। সেই মানুষটি হচ্ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আজকে এই মানুষটিকে জোর করে বন্দি করে রাখা হয়েছে। কেন বন্দি করে রাখা হয়েছে? বন্দি করে রাখা হয়েছে